স্টোনহেঞ্জ
🏛️ ১. স্টোনহেঞ্জের ইতিহাস
📍 অবস্থান:
স্টোনহেঞ্জ অবস্থিত ইংল্যান্ডের উইল্টশায়ার নামক এলাকায়, লন্ডনের দক্ষিণ-পশ্চিমে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরে।
🗿 নির্মাণকাল:
স্টোনহেঞ্জ ধাপে ধাপে তৈরি হয়েছে, প্রধানত তিনটি পর্যায়ে:
● প্রথম ধাপ (খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ বছর):
প্রথমে একটি বড় মাটির বৃত্ত খনন করা হয় (Henge)।
তার ভেতরে কাঠের স্তম্ভ ও গর্ত তৈরি করা হয়েছিল বলে ধারণা।
● দ্বিতীয় ধাপ (খ্রিস্টপূর্ব ২৫০০ বছর):
বিশাল পাথর (Sarsen stone ও Bluestone) এনে স্থাপন করা হয়।
এসব পাথর ২৫ টন ওজনের, এবং প্রায় ২০-২৫ ফুট লম্বা।
● তৃতীয় ধাপ (খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ বছর):
পাথরের নতুন বিন্যাস, পুনর্গঠন ও কিছু পাথর সরানো হয়।
🛠️ নির্মাণকাজ কেমন করে হয়েছিল?
অনেক পাথর আনা হয়েছিল ২০-২৫০ কিমি দূর থেকে (বিশেষত ব্লুস্টোন ওয়েলস থেকে)।
কোনো আধুনিক যন্ত্র ছিল না, তখনকার মানুষ গাছের গুঁড়ি, দড়ি, ও কৌশল ব্যবহার করে এগুলো নিয়ে এসেছে।
🔍 ২. স্টোনহেঞ্জের রহস্য ও তত্ত্ব
❓ কিসের জন্য বানানো হয়েছিল?
এখনো নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি। তবে গবেষকরা কিছু মত দিয়েছেন:
🌞 ১. জ্যোতির্বিজ্ঞান কেন্দ্র:
গ্রীষ্মের সাল্টিস (summer solstice)-এ সূর্য উদয় হয় এমনভাবে যে তার আলো স্টোনহেঞ্জের নির্দিষ্ট ফাঁক দিয়ে ঠিকভাবে পড়ে।
অনেকে বলেন, এটি একটি সৌর ক্যালেন্ডার বা ঋতুর হিসাব রাখার যন্ত্র।
🪦 ২. সমাধিক্ষেত্র:
আশপাশে বহু কবর পাওয়া গেছে, যেগুলো প্রায় ৫০০০ বছরের পুরনো।
ধারণা করা হয় এটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সমাধি স্থান ছিল।
৩. ধর্মীয় উপাসনা:
এটি হতে পারে এক ধরনের উপাসনালয় বা পূজা করার জায়গা, যেখানে আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠান হতো।
৪. ভিনগ্রহবাসী বা অদ্ভুত প্রযুক্তি:
কিছু তত্ত্ববিদ বলেন এটি বানানো অসম্ভব, তাই এটা ভিনগ্রহবাসী বা অতিপ্রাকৃত শক্তির কাজ হতে পারে — যদিও এসবের পেছনে বৈজ্ঞানিক প্রমাণ নেই।
📜 সারাংশ:
স্টোনহেঞ্জ একদিকে মানব ইতিহাসের এক অসাধারণ নিদর্শন, অন্যদিকে এটি এক রহস্যময় স্থান — যেখানে বিজ্ঞান, ইতিহাস, ধর্ম ও কল্পনা মিলেমিশে এক অবিশ্বাস্য গল্প তৈরি করে।
Comments
Post a Comment